বর্ষ শেষে কিছু পুরোণো কথা
----
ব্যাঙ্গালোরের খাওয়ার টেবিলের পশ্চিমের চেয়ারে বসে নাতির ঘরের
কাঁচের দরজা দিয়ে পুব দিকে একফালি ঝকঝকে আকাশ দেখা যাচ্ছিল।সেই রেশ
নিয়ে এক মুহূর্তে চলে গেলাম আমাদের গ্রামের বাড়ির সামনের ধান ক্ষেতের মাঠে। ঐ মাঠে মরসুমি ফসল ফলত কিন্তু খুব বড় মাঠ ছিল না।বিশেষ করে শীতকালে ঐ মাঠ তার বাসিন্দাদের বাড়ির উঠোন হয়ে যেত। আমাদের বাড়ির দক্ষিণে এই মাঠ ,মাঠের আরও দক্ষিণে ছিল বিলের মাঠ, পুবে ছিল মমিনচাচা-রহিমচাচাদের মুসলমান পাড়া।উত্তর-পুব কোনে ছিল বসির-পুকুর। শীতকালে সকাল থেকে এই মাঠে কাজ শুরু হতো-কাঠকুটো ,শুকনোপাতা জড়ো করে ঘিরে বসে আগুন পোহনো,গিন্নিবান্নি মহিলাদের ডাল ফেটিয়ে বড়ি দেওয়া,বাচ্চাদের মাঠের রোদে বসে সকালের খাবার খাওয়া।এ ছিল যেন এক উন্মুক্ত অবাধ পরম মহোৎসব। লেপ-কাঁথা ইত্যাদি জিনিষের পাহারাদার হতাম আমরা ছোটোরা।দুপুরের চান হতো ঐখানেই,মায়েরা লোহার বালতিতে জল রাখত রোদে,হিমানী গ্লিসারিন সাবান মাখিয়ে চান করিয়ে দিত আমাদের। এই সব মনে করে কি যে উত্তেজনা বোধ হচ্ছে তা বলে বোঝানো যাবে না। মাঠটা ছিল পাড়ার নারদকাকু ও বিশেকাকুদের।বিশেকাকুর ছোড়দি নদীপিসিমা তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে এল ভায়েদের কাছে। তখন ঐ ধান-ক্ষেতের কোনে একটুকরো জায়গায় কাঁচা-পাকা একটা শোয়ার ও একটা রান্না ঘর তৈরী করে দিল কাকুরা পাকাপাকি ভাবে বসবাস করার জন্যে।
আজ
মেঘলা আকাশ
No comments:
Post a Comment