Friday 8 November 2013

আবেগীমন


আবেগীমন
নরম ভেজা অমূর্ত আবেগগুলোকে দুহাত ভরে নেওয়া ,কেন মনে মনে শুধু ছুঁতে চাওয়া, একি পিরামিড না তাজমহল- এত কেবল বালুকাবেলায় ঝিঁনুক খোঁটার ছল। কালিদাসের কালে “শুষ্কং কাষ্ঠম্” “নীরস তরুবর ” হয়ে গেছে কখন,উথলি মন বেহিসাবি যখনি-কৌতূহলী হৃদয় উদ্বেগে উচ্চারিত,-আমাকে হারাতে গিয়ে তোমারো কী পরাজয় হয়নি। নীরব হৃদয় আপন আঁধারেই সন্ধানী-মন,হোক না সে বহুকাল বহুদিন বহুক্ষণ। আল্পসের চূড়ো উজ্জ্বল বর্ণচ্ছটায় ঝিকমিক ,আমিও তো সেখানে তখন উদাস—নীচে গভীর খাদ অপস্রিয়মান,দেখি নাই  ফিরে যখন। মনোমুগ্ধকর পরিমণ্ডলে একা থাকার তত্ত্বায়নবোধে কত কত মুখ এসে দু-হাত বাড়ায়, দূর-দূরান্তের পরিচিত মুখগুলি যায় সরে কোথায়, এ কী হয়! অবোধ দুটি শব্দ যদি আসে বর্ণনায় ,অনায়াসে না-বোধের সম্মার্জনী নিও সমালোচনায়। শিউলিভেজা ঘাসে শরতের বাতাস হঠাৎ আটকে যায় এখানে। ওপর আকাশে ও সাদা মেঘের ভেলা ছুটে চলেছে নিরুদ্দেশের পথে কোথায়, নির্জন দুপুরে মন থেমে যায় শরৎ-বসন্তের হিসাব কোনায়। অবাক পৃথিবীর পরিমণ্ডলের আয়তন  যেন যার যার হাতের মুঠোয়, ওহঃ ! তুমি কত সুন্দর –মনোমোহিনী ,দৃষ্টিনন্দিনী প্রকৃতি  সবাকার সেখানে।
[১১-১০-২০১৩। ব্যাঙ্গালুরু।]

আমি ও ইয়ঙফ্র


  আমি ও ইয়ঙফ্র
পাহাড়ের অসমতল পথে একলা চলা তো সহজ আরামের  মন বিমননে,স্বচ্ছন্দ গতিভঙ্গে একদল অবলা অবেলায় একসাথে অনুষ্টুপ ছন্দ-চরণে। সর্পিল গতিতে চলন্ত যানে আমরা উঁকি ঝুঁকি ভঙ্গিমায় সওয়ারী কজন,সকলেই বিহ্বল অভিভূত ইয়ঙফ্রর চূড়োয় থামল গতি যখন বাক্যহারা নির্নিমেষ। সুন্দর স্বর্ণমুকুটের মাঝে একটুকরো হীরের দ্যুতি-অরুণ অরুণিমায় ঝলমল অশেষ নেই-সীমানায়। দৃষ্টি শুধু দৃষ্টির মাঝে হারিয়ে খোঁজে ইতি-উতি হারিয়ে যাওয়া মন কিনারায়। এ অনুভূতির হৃদয়- ফুলের ভিতরকার মধুটুকুর মতো মধুর” ধার করা কথায়। বরফ-ঘরের শীতলতা ছোঁয়নি কাউকেই, নিমেষের উচ্ছলতায় উদ্দাম আমজনতা সেইসময়। সময়ের  উপেক্ষায় ও ফেলে আসার বিষণ্ণতায় মন ভারী হয় তখন। একসাথের সময়সঙ্গী সবাই সবকিছুই যখন আপনজন , হোক তা পলকমাত্রায়।

[ব্যাঙ্গালুরু। ০৫-১১-২০১৩।]

কে তুমি কার


কে তুমি কার

এখন মেঘলা আকাশ, উদাস করা দিন,মন খারাপের বেলা- কেউ কাঁদেনি, কেউ কাঁদে না, ‘আর কিছুদিন থাকলে আরও কিছু দিতে পারত’ এই শুধু হিসেবের খেলা। কোথাও আবার দেহ-মনের ভাষায় না-বলা কিছু বলা, যা তুমি বোঝো- তাই এত খাঁ খাঁ করা অবেলায় চলা ঝটপটকেমন করে শামুকের মতো ছিল জীবনের গতি,হারানো পথে ভয় ছিল পা ফেলা-,কিন্তু যে পথ হয়নি কখনও তাও কি চাওয়া থাকে হঠাৎ কোনোদিন। অন্তরের গভীরে-জীবন মানুষের না মানুষ জীবনের-জিজ্ঞাসায় ছিন্নভিন্ন মন ক্ষত-বিক্ষত দেখল তোমাকে একদিন অসহায়। হিসেব করা খেলার দিনে সরব সাথী পাওনাদার, গতিভঙ্গের কালে হীরের দ্যুতিও ম্লান জীবনের অক্ষমতায় বিরস দিনে। ঊনিশে এপ্রিলের উৎসবের শুভমহরতে বাড়িওয়ালীর অন্তরমহল যখন উথাল পাথাল চোখেরবালিতে দিশেহারা হঠাৎ লিয়রের নৌকাডুবি খবরের প্রথম পাতায় এত ভেজা শরীর কেন রেন-কোট তো ছিল গায়, আগুনের দহনে জ্বলতে জ্বলতে দোসর করলে নীরবতা। চিত্রাঙ্গদার দেহ ভঙ্গিমায় সব চরিত্র কাল্পনিকের মতো নাড়া দিলে জগৎ । সেখানে আবহমান ধরে উড়ে উড়ে তিতলি ঘুরবে তোমার,অতো রোদে সকলের চোখে সানগ্লাস তখন, সত্যান্বেষীর জীবন যখন হয়ে গেছে সকলের। অথচ মনে ছড়ানো অ-সুখ অশান্তির---শুধু তোমারি জন্যে।

[০৭-১০-২০১৩। ব্যাঙ্গালুরু ।]

স্মৃতিসুখ


স্মৃতিসুখ

ছড়ানো বকুল দুহাত কুড়িয়ে আঁচল ভরা,
সোনাঝুরির পথে দুচোখ ভরে কৃষ্ণচূড়া লাল,
হঠাৎ কখন ঝরে গিয়ে সবুজ পাতা ভরে গেছে ডাল,
আবার দেখি পথে নরম কনকচাঁপা ঝরা।
মুচকুন্দের লম্বা আঙুলদুবার দেখারপাতায়,
নাম-না-জানা বিলিতি-চাঁপা রবিঠাকুরের কথায়
জারুল গুলো হাল্কা সাদা-বেগুনী সাথে,----
ছড়িয়ে আরাম, জুড়িয়ে বিরাম সপ্তপর্ণীর পথে
একি শুধুই অলস যাপন বিলাস-সময় ধরে,
অতীত কেন অতীত কেবল আমার কবির তরে
আমার কেন বলা শুধু বিশ্বজোড়া নাম,
দেশে দেশে তাঁর ঘর আছে, দেশে দেশে তাঁর ধাম।।

[১১--২০০৭]